HSC-ICT-Chapter-2-কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং
Communication Systems and Networking
ডেটা কমিউনিকেশন (Data Communication)
ডেটা কমিউনিকেশন পদ্ধতিতে বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত কম্পিউটার হতে কম্পিউটারে অথবা কম্পিউটার ও অন্য কোনো মাধ্যমে ডেটা আদান-প্রদান সম্ভব। কোনো ডেটাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অথবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে অথবা একজনের ডেটা অন্যজনের নিকট বাইনারি পদ্ধতিতে স্থানান্তর করার পদ্ধতিকে ডেটা কমিউনিকেশন বলে। ডেটা কমিউনিকেশন পদ্ধতির পাঁচটি মৌলিক উপাদান হলো- ১. উৎস (Source), ২. প্রেরক (Transmitter), ৩. মাধ্যম (Media), ৪. প্রাপক (Receiver)ও ৫. গন্তব্য (Destination) ১. উৎস (Source) : যে ডিভাইস হতে ডেটা পাঠানো হয় তাকে উৎস বলে। যেমন- কম্পিউটার, টেলিফোন ইত্যাদি। ২. প্রেরক (Transmitter) : উৎস থেকে প্রাপকের নিকট ডেটা পাঠানোর জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তাকে প্রেরক বলে। উৎস থেকে ডেটা সরাসরি পাঠানো যায় না, এর জন্য প্রেরকের প্রয়োজন হয়। যেমন- মডেম।চিত্র : ডেটা কমিউনিকেশনের সাধারণ ব্লক চিত্র
৩. মাধ্যম (Media) : যার মাধ্যমে ডেটাসমূহ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তর করা হয় তাকে মাধ্যম বলে। ডেটা কমিউনিকেশনের মাধ্যম হিসেবে ক্যাবল, পাবলিক টেলিফোন লাইন, রেডিও ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ, স্যাটেলাইট প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। ৪. প্রাপক (Receiver) : যে যন্ত্র ডেটা গ্রহণ করে তাকে প্রাপক বলে। প্রাপক যন্ত্র হিসেবে মডেম ব্যবহার করা হয়। গ্রাহক কম্পিউটারের সাথে যুক্ত মডেম কম্পিউটারের অ্যানালগ সংকেতকে ডিজিটাল সংকেতে পরিণত করে। ৫. গন্তব্য (Destination) : উৎস হতে যে কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে ডেটা পাঠানো হয় তাকে গন্তব্য বলে। গন্তব্য হিসেবে সার্ভার বা কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। —–www.prokashitcare.comব্যান্ড উইড্থ্ (Band Width)
এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ডেটা স্থানান্তরের হারকে ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীড বা ব্যান্ড স্পীড বা ব্যান্ড উইড্থ্ (Band Width) বলা হয়। এ ব্যান্ড উইড্থ্ সাধারণত bit per second (bps) দ্বারা হিসাব করা হয়।
অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ বিট ট্রান্সমিট করা হয় তাকে bps বা ব্যান্ড উইড্থ্ বলে। যেমন, 256 kbps বলতে প্রতি সেকেন্ডে 256 কিলোবিট ডেটা ট্রান্সমিট হয়।
তেমনি 1Mbps বলতে প্রতি সেকেন্ডে 1024 ´ 1024 বিট ডেটা ট্রান্সমিট হয়। তদ্রুপ, 1 Gbps বলতে প্রতি সেকেন্ডে 1024 ´ 1024 ´ 1024 বিট ডেটা ট্রান্সমিট হয়।
একটি চ্যানেলের মধ্য দিয়ে 10 সেকেন্ডে 1,00,000 বিট ডেটা ট্রান্সমিট হলে এর ব্যান্ড উইড্থ কত?
10 সেকেন্ডে ডেটা ট্রান্সমিট হয় 1,00,000 বিট
1 সেকেন্ডে ডেটা ট্রান্সমিট হয় = বিট =10,000 বিট
চ্যানেলের ব্যান্ড উইড্থ =10,000 bps
ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীডের উপর ভিত্তি করে ডেটা কমিউনিকেশনের গতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. ন্যারো ব্যান্ড (Narrow Band), ২. ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band) ও ৩. ব্রড ব্যান্ড (Broad Band)।
১. ন্যারো ব্যান্ড (Narrow Band) : যে ব্যান্ডে ডেটা স্থানান্তর গতি সাধারণত সর্বনিম্ন 45 bps (Bit Per Second) থেকে সর্বোচ্চ 300 bps (Bit Per Second) পর্যন্ত হয়ে থাকে, তাকে ন্যারো ব্যান্ড বা Sub-Voice Band বলে। এর ফ্রিকুয়েন্সি 300 থেকে 3400 হার্টজ। সাধারণত ধীর গতি ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এ ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়। যেমন- টেলিগ্রাফিতে তারের ব্যবহার বেশি হওয়ায় ডেটা স্থানান্তরের গতি কম। টেলিগ্রাফিতে উক্ত ব্যান্ডকে ব্যবহার করা হয়।
২. ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band) : যে ব্যান্ডে ডেটা স্থানান্তর গতি সাধারণত সর্বনিম্ন 1200 bps থেকে সর্বোচ্চ 9600 bps পর্যন্ত হয়ে থাকে, তাকে ভয়েস ব্যান্ড বলে। এর ফ্রিকুয়েন্সি 300 থেকে 3600 হার্টজ। সাধারণত টেলিফোনে এ ব্যান্ড উইড্থ বেশি ব্যবহার করা হয়। ডেটা কমিউনিকেশনে কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে, কার্ড রিডার থেকে কম্পিউটারে এবং কীবোর্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ভয়েস ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়।
৩. ব্রড ব্যান্ড (Broad Band) : উচ্চ গতিসম্পন্ন যে ব্যান্ডে ডেটা স্থানান্তর গতি সাধারণত সর্বনিম্ন 1 Mbps থেকে সর্বোচ্চ কয়েক Giga Bit Per Second পর্যন্ত হয়ে থাকে, তাকে ব্রড ব্যান্ড বলে। এর ফ্রিকুয়েন্সি 1 গিগাহার্টজ এর চেয়ে বেশি। ব্রড ব্যান্ড সাধারণত ফাইবার অপটিক ক্যাবল, DSL (Digital Subscribers Link) ক্যাবল, কো-এক্সিয়াল ক্যাবল, মডেম, রেডিও লিংক, মাইক্রোওয়েভ, স্যাটেলাইট, ব্লু-টুথ, ওয়াই-ফাই, ওয়াই-ম্যাক্স ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। স্পিডের জন্য DSL ক্যাবল মডেমের দাম কম হওয়ায় বাংলাদেশে ব্রড ব্যান্ড প্রচলনই বর্তমানে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিরবিছিন্ন যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই ব্যান্ড উইড্থ্ ব্যবহৃত হয়।
ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেটের সুবিধা :
- মুহূর্তের মধ্যে ইন্টারনেট থেকে ছবি, ভিডিও ডাউনলোড ও আপলোপ করা যায়।
- ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি ডায়াল আপ কানেকশনের চেয়ে এক শ গুণ বেশি।
- ব্রড ব্যান্ড কানেকশনের মাধ্যমে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখা যায় এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যায়।
- টেলিফোন লাইন ব্যস্ত রাখার প্রয়োজন নেই এবং স্বতন্ত্রভাবে টেলিফোন ব্যবহার করা যায়।
- আনলিমিটেড ইন্টারনেট অ্যাকসেস করা যায়।
ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেটের অসুবিধা :
- এক্ষেত্রে বেশি গতির ইন্টারনেট পাওয়া কঠিন। ফলে ছবি, ভিডিও ডাউনলোড ও আপলোড করতে প্রচুর সময় লাগে।
- ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন মাঝে মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
- সংযোগের ধরন ও ব্যবহার পদ্ধতি জটিল প্রকৃতির।